বাংলাদেশে এখন জন্ম নিবন্ধন করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আগে শুধু হাতে লেখা ফরম পূরণ করতে হতো, এখন অনলাইনে আবেদন করা যায়। জন্ম নিবন্ধন একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা স্কুলে ভর্তি, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, এমনকি বিদেশ ভিসার জন্যও প্রয়োজন হয়। তাই সঠিকভাবে এবং ইংরেজি তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করা খুবই জরুরি। নিচে ধাপে ধাপে অনলাইনে ইংরেজি জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম দেওয়া হলো:
ধাপ ১: সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ
প্রথমে আপনাকে bdris.gov.bd/br/application ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এই সাইটটি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের সরকারি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।
ধাপ ২: আবেদন করার স্থান নির্বাচন
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনাকে জন্ম নিবন্ধন কোথায় করবেন তা নির্বাচন করতে হবে। এখানে তিনটি অপশন থাকে:
- জন্মস্থান অনুযায়ী
- স্থায়ী ঠিকানা অনুযায়ী
- বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী
আপনার সুবিধা মতো একটি নির্বাচন করুন।
ধাপ ৩: ফরম পূরণ করা
এখন একটি ফরম আসবে যেখানে আপনাকে শিশুর/আবেদনকারীর তথ্য দিতে হবে।
- নাম (বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় লিখতে হবে)
- জন্ম তারিখ (দিন-মাস-বছর ফরম্যাটে)
- লিঙ্গ
- জন্মস্থান ও ঠিকানা
- পিতা-মাতার নাম, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (যদি থাকে)
👉 মনে রাখবেন: তথ্য দিতে হবে বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায়।
আরও দেখুন: জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের নতুন নিয়ম।
ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড
জন্ম নিবন্ধনের জন্য কিছু ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয়। বয়স অনুযায়ী এগুলো ভিন্ন হতে পারে:
- ০–৪৫ দিন বয়সের জন্য: হাসপাতালের জন্ম সনদ বা টিকা কার্ড, বাসার করের রসিদ/ভাড়ার চুক্তিপত্র।
- ৪৬ দিন–৫ বছর বয়সের জন্য: উপরোক্ত কাগজপত্রের সাথে পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্র।
- ৫ বছরের বেশি বয়সের জন্য: স্কুলের সনদ, পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন, ঠিকানার প্রমাণ।
ফাইল অবশ্যই PDF বা JPEG ফরম্যাটে হতে হবে এবং প্রতিটির সাইজ 100 KB এর নিচে রাখতে হবে।
ধাপ ৫: আবেদন জমা ও প্রিন্ট
সব তথ্য পূরণ এবং কাগজপত্র আপলোড করার পর ফরম সাবমিট করুন। সাবমিট করলে একটি ট্র্যাকিং নম্বর পাবেন। এরপর ফরমটি প্রিন্ট করে রাখুন।
ধাপ ৬: অফিসে যাচাই ও সনদ সংগ্রহ
আপনি যে স্থানের (ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশন) অধীনে আবেদন করেছেন, সেখানে ফরম জমা দিতে হবে। প্রয়োজন হলে তারা কাগজপত্র যাচাই করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে সাধারণত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন সনদ পাওয়া যায়।
ধাপ ৭: অনলাইনে যাচাই
সনদ হাতে পাওয়ার পর এর সঠিকতা যাচাই করতে পারেন। এজন্য everify.bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে চেক করতে হবে।
আরও দেখুন: কিভাবে জন্ম নিবন্ধন বাংলা থেকে ইংরেজিতে করবেন।
গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- ফরম পূরণের সময় বানান ও তারিখ ভালো করে যাচাই করুন।
- ইংরেজি অংশে নামের বানান অবশ্যই পাসপোর্ট/ভবিষ্যতে যেভাবে লাগবে সেভাবে লিখুন।
- কাগজপত্র স্ক্যান বা ছবি স্পষ্ট হতে হবে।
- আবেদন জমা দেওয়ার পর ট্র্যাকিং নম্বরটি হারাবেন না।
উপসংহার
অনলাইনে ইংরেজি জন্ম নিবন্ধন করা খুবই সহজ। শুধু সঠিকভাবে তথ্য পূরণ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত ও ধাপে ধাপে আবেদন করলেই কাজ সম্পন্ন হয়। সময়মতো জন্ম নিবন্ধন করলে ভবিষ্যতে পাসপোর্ট বা ভিসা করার সময় কোনো ঝামেলা হবে না।
আমি একটি সরকারি চাকরি করি পাশাপাশি ব্লগিং করি। আমি চাকরি সুবাদে বিভিন্ন জানার চেষ্টা করি তারই পেক্ষিতে এই সাইট টা পরিচালনা করা। তাই এখানের দেওয়া সকল তথ্য বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে লিখি।