ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে

Spread the love

ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকেই নানা কারণে তাদের নামের ভুল ঠিক করতে চান। তবে কীভাবে এটি সহজে করা যায়? ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে? কতদিন সময় লাগে? ফি কত দিতে হয়? আজকে আপনাকে এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দেব।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের পুরো প্রক্রিয়া খুব সহজ, যদি আপনি জানেন কীভাবে এগোতে হবে। চলুন ধাপে ধাপে দেখে নেওয়া যাক।

ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে
ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

নাম সংশোধনের জন্য কিছু বিশেষ ডকুমেন্ট দরকার হয়। নিচে সেগুলোর তালিকা দেওয়া হলো, এগুলো ছাড়া নাম সংশোধন করা সম্ভব নয়:

  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ: পিইসি, জেএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি।
  • জন্ম নিবন্ধন সনদ: আপনার জন্ম তারিখ যাচাইয়ের জন্য।
  • পাসপোর্ট: যদি শিক্ষাগত সনদ না থাকে, পাসপোর্টের কপি গ্রহণযোগ্য।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স: এক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • বিবাহের কাবিন নামা: বিবাহিত হলে কাবিন নামা জমা দিতে হবে।
  • সন্তানের শিক্ষাগত সনদ: সন্তানের সনদও নাম সংশোধনে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
  • পিতা-মাতা বা ভাই-বোনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি: পরিবারের সদস্যদের পরিচয়পত্র কপি জমা দিতে হতে পারে।

সংশোধনের ধাপসমূহ

নাম সংশোধনের প্রক্রিয়া খুবই সহজ। আপনাকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে:

ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন প্রক্রিয়া
ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন প্রক্রিয়া
  1. অনলাইনে আবেদন করুন
    নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যান (services.nidw.gov.bd) এবং আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে লগইন করুন।
  2. তথ্য আপডেট করুন
    আপনার প্রোফাইল থেকে সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য আপডেট করুন।
  3. ডকুমেন্ট আপলোড করুন
    উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলোর স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।
  4. ফি প্রদান করুন
    সংশোধনের জন্য ৩৪৫ টাকা ফি দিতে হবে, যা মোবাইল ব্যাংকিং বা অন্য কোনো পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে প্রদান করা যায়।
  5. আবেদন জমা দিন
    সঠিকভাবে সকল তথ্য পূরণ করার পর, আপনার আবেদনটি জমা দিন।
  6. অনুমোদনের অপেক্ষা
    সাধারণত, ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

কত সময় লাগে?

নাম সংশোধনের সময় সাধারণত ৭ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত হতে পারে। এটি নির্ভর করে আপনার সংশোধনের ধরণ এবং কে এটি যাচাই করছে তার উপর:

  • উপজেলা নির্বাচন অফিস: ৭ দিন
  • জেলা নির্বাচন অফিস: ১৫ দিন
  • আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস: ৩০ দিন
  • NID Wing এর মহাপরিচালক: ৪৫ দিন

তবে কিছু প্রশাসনিক বা সরকারি ছুটির কারণে এই সময় একটু কমবেশি হতে পারে।

আরও দেখুন: জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের নতুন নিয়ম ২০২৪জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে কি কি লাগে ও নিয়ম

সংশোধনের জন্য ফি

ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট ফি রয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:

সংশোধনের ধরণফি (টাকা)
প্রথমবার আবেদন২৩০
দ্বিতীয়বার আবেদন৩৪৫
তৃতীয়বার বা পরবর্তীবার৫৭৫

ফি নির্ধারণ করা হয় সংশোধনের ধরণ এবং কতবার আবেদন করছেন তার ওপর ভিত্তি করে। ফি প্রদান মোবাইল ব্যাংকিং বা অন্য পেমেন্ট পদ্ধতিতে করা যাবে।

কোথায় যাবেন?

নাম সংশোধনের জন্য সরাসরি নির্বাচন কমিশনের অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, তবে অনলাইনে আবেদন করাও একটি বিকল্প। নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • উপজেলা নির্বাচন অফিস: সরাসরি গিয়ে আবেদন করা যাবে।
  • অনলাইন আবেদন: নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে লগইন করে অনলাইনে আবেদন করা যাবে।

প্রক্রিয়া সংক্ষেপ

  1. নিবন্ধন করুন বা লগইন করুন
  2. প্রোফাইল থেকে তথ্য আপডেট করুন
  3. ডকুমেন্ট আপলোড করুন
  4. ফি প্রদান করুন
  5. আবেদন জমা দিন
  6. অনুমোদনের অপেক্ষা করুন

FAQs

১. অনলাইনে আবেদন করলে কতদিন সময় লাগবে?

অনলাইনে আবেদন করলে সাধারণত ৭ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে, তবে কিছু ক্ষেত্রে ৪৫ দিন পর্যন্ত লাগতে পারে।

২. একবার নাম সংশোধন করার পর কি আবারও সংশোধন করা যাবে?

হ্যাঁ, পুনরায় সংশোধন করা সম্ভব। তবে পরবর্তীবার ফি বেশি দিতে হবে।

৩. ভোটার আইডি কার্ডে কোন কোন তথ্য সংশোধন করা যাবে?

নাম, পিতা-মাতা বা স্বামীর নাম, জন্ম তারিখসহ বিভিন্ন মৌলিক তথ্য সংশোধন করা যায়।

৪. ফি কোথায় জমা দিতে হয়?

ফি মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ, নগদ, রকেট) বা অন্যান্য পেমেন্ট পদ্ধতিতে জমা দেওয়া যায়।

শেষ কথা

ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধন করা এখন সহজ এবং দ্রুত হয়ে গেছে। শুধু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করুন। কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করলেই আপনার নাম সংশোধন হয়ে যাবে।

সঠিক সময়ে এবং সঠিক প্রক্রিয়ায় নাম সংশোধন করলে কোনো জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে না।

Leave a Comment