যারা জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য ছবি তুলেছেন এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েছেন তাদের একটি স্লিপ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, এই স্লিপের নম্বর ব্যবহার করে কীভাবে মোবাইল ফোন দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোড করা যায়। আজকের লেখায় আমরা এই প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে দেখব।
জাতীয় পরিচয়পত্র বের করবেন
জাতীয় পরিচয়পত্র করার পর সাধারণত কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়। 105 থেকে আপনার ফোনে একটি এসএমএস আসবে, যেখানে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি জানানো হবে। যদি আপনি এই এসএমএস পেয়ে যান, তাহলে স্লিপ নম্বরের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যদি এসএমএস না আসে, তাহলে আপনি স্লিপ নম্বর ব্যবহার করে আপনার মোবাইল ফোন দিয়েই জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, ছবি তোলা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার পর কমপক্ষে 15 কার্যদিবস অপেক্ষা করতে হবে। এর পরেই আপনি স্লিপ নম্বর দিয়ে চেষ্টা করলে জাতীয় পরিচয়পত্রটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
কিভাবে স্লিপ দিয়ে NID কার্ড বের করবেন?
- ব্রাউজার ওপেন করুন: আপনার মোবাইল ফোন থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করুন।
- ওয়েবসাইটে যান: ইউআরএল বারে
services.nidw.gov.bd
লিখে সার্চ করুন। সবার উপরেই এই ওয়েবসাইটটি দেখতে পাবেন। এটিতে ক্লিক করে প্রবেশ করুন। - রেজিস্টার করুন: ওয়েবসাইটে আসার পর ‘অ্যাকাউন্ট নেই’ অপশনের নিচে ‘রেজিস্টার করুন’ লেখাতে ক্লিক করুন।
- ফর্ম পূরণ করুন: একটি ফর্ম আসবে। এখানে সবার উপরে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অবলিক ফরম নাম্বার’ লেখা থাকবে। এই স্থানে আপনার এনআইডি কার্ডের স্লিপ নম্বরটি দিন। তবে, স্লিপ নম্বর দেওয়ার আগে
NIDFN
টাইপ করতে হবে। যেমন:NIDFN123456789
। - জন্ম তারিখ দিন: আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র করার সময় যে জন্ম তারিখ দিয়েছিলেন, সেটি এখানে দিন।
- ক্যাপচা পূরণ করুন: নিচে একটি ক্যাপচা কোড থাকবে। এটি হুবহু বক্সের ভিতরে টাইপ করুন।
- সাবমিট করুন: সব তথ্য দেওয়ার পর ‘সাবমিট’ লেখাতে ক্লিক করুন।
ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর যোগ করা
সাবমিট করার পর আপনার সামনে একটি নতুন ইন্টারফেস আসবে।
- বর্তমান ঠিকানা দিন: প্রথমে আপনার বর্তমান ঠিকানার বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা সিলেক্ট করুন।
- স্থায়ী ঠিকানা দিন: একইভাবে আপনার স্থায়ী ঠিকানার বিভাগ, জেলা এবং উপজেলা সিলেক্ট করুন।
- পরবর্তী ধাপে যান: ঠিকানা দেওয়া হয়ে গেলে ‘পরবর্তী’ লেখাতে ক্লিক করুন।
যদি আপনার মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকে, তাহলে সেটি এখানে চলে আসবে। যদি না থাকে, তাহলে আপনাকে মোবাইল নম্বর যোগ করতে হবে।
- যোগাযোগের তথ্য পরিবর্তন: ‘যোগাযোগের তথ্য পরিবর্তন’ লেখাতে ক্লিক করুন।
- ওটিপি পদ্ধতি নির্বাচন: আপনি ইমেইল বা মোবাইলের মাধ্যমে ওটিপি কোড নিতে পারবেন। মোবাইল সিলেক্ট করুন এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর দিন।
- ওটিপি পাঠান: ‘ওটিপি পাঠান’ লেখাতে ক্লিক করুন। আপনার মোবাইলে 105 থেকে একটি ছয় সংখ্যার ওটিপি কোড আসবে।
- ওটিপি দিন: ওটিপি কোডটি এখানে দিয়ে ‘পরবর্তী’ লেখাতে ক্লিক করুন।
NID Wallet ব্যবহার করে ফেস স্ক্যান
এবার আপনাকে NID Wallet ব্যবহার করতে হবে।
- NID Wallet ওপেন করুন: ‘ট্যাপ টু ওপেন এনআইডি ওয়ালেট’ লেখাতে ক্লিক করুন।
- অ্যাপ ইনস্টল করুন: যদি আপনার মোবাইলে NID Wallet অ্যাপ্লিকেশনটি ইনস্টল করা না থাকে, তাহলে একটি বার্তা আসবে। এখান থেকে কিউআর কোডটি কপি করে নিন।
- প্লে স্টোরে যান: Google Play Store-এ গিয়ে NID Wallet অ্যাপটি ইনস্টল করুন। যদি আগে থেকে ইনস্টল করা থাকে, তাহলে সেটি আনইনস্টল করে আবার নতুন করে ইনস্টল করুন। এতে স্ক্যানিং-এর সমস্যা এড়ানো যাবে।
- অ্যাপ ওপেন করুন: NID Wallet ইনস্টল হয়ে গেলে এটি ওপেন করুন। ‘এগ্রি অ্যান্ড কন্টিনিউ’ লেখাতে ক্লিক করুন।
- পারমিশন দিন: ‘টার্ন অন’ লেখাতে ক্লিক করুন এবং পারমিশন দিন। ক্যামেরা ওপেন হয়ে যাবে।
- কোড পেস্ট করুন: ‘কোড’ অপশনে ক্লিক করুন। যেহেতু আমরা ব্রাউজার থেকে কোড কপি করেছি, এটি এখানে পেস্ট হয়ে যাবে।
- ফেস স্ক্যান করুন: ‘স্টার্ট ফেস স্ক্যান’ এ ক্লিক করুন। আপনার ক্যামেরা ওপেন হবে। প্রথমে আপনার মুখ সরাসরি রাখুন, তারপর ডানদিকে এবং বামদিকে মাথা ঘুরান। সব টিকমার্ক চলে এলে ‘ওকে’ প্রেস করুন।
NID কার্ড ডাউনলোড
ফেস স্ক্যান সফল হলে আপনি আবার ক্রোম ব্রাউজারে ফিরে আসবেন।
- তথ্য যাচাই: এখানে আপনার নাম, এনআইডি নম্বর, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর সহ সকল তথ্য দেখতে পাবেন।
- পাসওয়ার্ড সেট করুন (ঐচ্ছিক): আপনি চাইলে ‘সেট পাসওয়ার্ড’ এ ক্লিক করে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করতে পারেন, যাতে পরবর্তীতে সহজে লগইন করতে পারেন। যদি না চান, তাহলে ‘এড়িয়ে যান’ লেখাতে ক্লিক করুন।
- ডাউনলোড করুন: নিচের দিকে স্ক্রল করলে ‘ডাউনলোড’ লেখা দেখতে পাবেন। এটিতে ক্লিক করুন।
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রটি পিডিএফ ফরম্যাটে ডাউনলোড হয়ে যাবে। এটি একটি পিডিএফ রিডার বা যেকোনো পিডিএফ ওপেনারের মাধ্যমে ওপেন করুন। আপনি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি দেখতে পাবেন। যতদিন পর্যন্ত আপনার স্মার্ট কার্ড না আসে, ততদিন পর্যন্ত আপনি এই অনলাইন কপিটি প্রিন্ট করে লেমিনেশন করে ব্যবহার করতে পারবেন।
আশা করি, এই নির্দেশিকা অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। ভিডিওটি কেমন লাগলো, কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ভালো লাগলে লাইক দিন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
আমি একটি সরকারি চাকরি করি পাশাপাশি ব্লগিং করি। আমি চাকরি সুবাদে বিভিন্ন জানার চেষ্টা করি তারই পেক্ষিতে এই সাইট টা পরিচালনা করা। তাই এখানের দেওয়া সকল তথ্য বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে লিখি।