জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের নতুন নিয়ম ২০২৪

Spread the love

আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল জন্ম তারিখ? চিন্তার কিছু নেই, কারণ এর সমাধান সহজ! আমরা প্রায়ই দেখি মানুষ ভোটার আইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে চায়, কিন্তু কীভাবে সেটা করতে হয়, তা ভালোভাবে জানে না। আজকে আপনাকে সেই প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত জানাবো, যাতে আপনি সহজে এবং দ্রুততার সাথে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন করতে পারেন।

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

জন্ম তারিখ সংশোধন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। এই ডকুমেন্টগুলো ছাড়া আবেদন গ্রহণ হবে না, তাই সেগুলো প্রস্তুত রাখুন:

  • এসএসসি/এইচএসসি সনদ: আপনার জন্ম তারিখের প্রমাণ হিসেবে শিক্ষাসনদ গুরুত্বপূর্ণ।
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ: আপনার জন্ম নিবন্ধনের তথ্য যাচাই করতে এই সনদ আবশ্যক।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্ট: যদি আপনার শিক্ষাসনদ না থাকে, তবে এগুলো বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
  • বিবাহের কাবিননামা: যদি বিবাহিত অবস্থার কারণে কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন হয়, তবে এই ডকুমেন্ট লাগবে।
  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সার্ভিস বই: সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রমাণপত্রের প্রয়োজন হতে পারে।

এগুলো সব ঠিকঠাক থাকলে, আপনি সহজেই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।

অনলাইনে আবেদন করার ধাপসমূহ

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে, অনলাইনে আবেদন করা সবচেয়ে সহজ এবং দ্রুততর প্রক্রিয়া। এখানে ধাপে ধাপে কীভাবে করতে হবে তা বর্ণনা করা হলো:

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের অনলাইন প্রক্রিয়া
জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের অনলাইন প্রক্রিয়া
  1. ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন: প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
  2. অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন: যদি আপনার অ্যাকাউন্ট না থাকে, রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে।
  3. লগইন করুন: রেজিস্ট্রেশনের পর লগইন করে প্রোফাইল এডিট অপশনে যান।
  4. প্রোফাইল এডিট করুন: প্রোফাইল অপশনে গিয়ে এডিট বাটনে ক্লিক করুন। এখানে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের অপশন থাকবে।
  5. নতুন জন্ম তারিখ দিন: বর্তমান জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে সঠিক জন্ম তারিখ লিখুন।
  6. ডকুমেন্ট আপলোড করুন: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো স্ক্যান করে আপলোড করুন।
  7. আবেদন জমা দিন: সব তথ্য ঠিক থাকলে আবেদন জমা দিন এবং ফি পরিশোধ করুন।

এই প্রক্রিয়ায় আবেদন জমা দেওয়ার পর, আপনার সংশোধনের কাজ শুরু হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের কত সময় লাগে?

অনেকেই জানতে চান, “কত দিন লাগবে?”। সাধারণত, সংশোধন সম্পন্ন করতে সাত (০৭)  দিন থেকে ৪৫ দিনের মতো সময় লাগে। তবে আইডি কার্ড সংশোধনের ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে সময় বেশি কম লাগে । নিচে সংশোধনের বিস্তারিত সময়কাল দেওয়া হলো:

ক্যাটাগরিসময়কাল
ক ক্যাটাগরি৭ দিন
খ ক্যাটাগরি১৫ দিন
গ ক্যাটাগরি৩০ দিন
ঘ ক্যাটাগরি৪৫ দিন

তবে, কিছু ক্ষেত্রে সরকারি ছুটি বা অন্য কোনো কারণে ২-৫ দিনের বিলম্ব হতে পারে।

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের ফি কত?

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট ফি রয়েছে। আপনি কতবার সংশোধন করছেন তার উপর ভিত্তি করে ফি ভিন্ন হতে পারে। নিচে ফি তালিকা দেওয়া হলো:

  • প্রথমবার সংশোধনের জন্য: ২৩০ টাকা (ভ্যাট সহ)
  • দ্বিতীয়বার সংশোধনের জন্য: ৩৪৫ টাকা (ভ্যাট সহ)
  • তৃতীয়বার এবং পরবর্তীতে: ৫৭৫ টাকা (ভ্যাট সহ)
সংশোধনের ধরনফি (ভ্যাট সহ)
ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন২৩০ টাকা
অন্যান্য তথ্য সংশোধন১১৫ টাকা
উভয় তথ্য সংশোধন৩৪৫ টাকা

এই ফিগুলি অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে, যেমন বিকাশ বা নগদ।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

১. জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য কতো সময় লাগে?

সাধারণত ৭ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে, কিন্তু কখনো কখনো অতিরিক্ত কয়েকদিন লাগতে পারে।

২. সকল ডকুমেন্টস না থাকলে কী করবো?

আপনার জন্ম তারিখ প্রমাণ করার জন্য বিকল্প ডকুমেন্ট হিসেবে ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট ব্যবহার করতে পারেন।

৩. কতোবার সংশোধন করা যাবে?

সংশোধন করার সংখ্যা সীমিত নয়, তবে পরবর্তী প্রতিবার সংশোধনে ফি বাড়বে।

৪. যদি ফি জমা দিতে ভুল করি, তাহলে কী করবো?

ফি জমা না দিলে আবেদন সম্পন্ন হবে না, তাই আপনার আবেদন পুনরায় শুরু করতে হবে।

শেষ কথা

জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধন করতে যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে লেখাটি আপনাকে সাহায্য করবে। ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখুন, সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন এবং যথাসময়ে আপনার আবেদন জমা দিন। এতে আপনার ভোটার আইডির তথ্য সঠিক হবে এবং যেকোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

3 thoughts on “জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধনের নতুন নিয়ম ২০২৪”

Leave a Comment