এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম

Spread the love

বিভিন্ন সময় আমাদের পাসপোর্ট সংশোধন করার দরকার হয়। আবার আপনারা অনেকেই আছেন, যারা নিজের এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম জানতে চান। মূলত সেই সকল ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে করে আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

কারণ, আপনি কিভাবে আপনার এনআইডি দিয়ে পাসপোর্ট সংশোধন করবেন, তার সকল ধাপ গুলো আজকের আর্টিকেলে সহজ ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। তবে এই বিষয় গুলো জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই এই লেখাটি মনযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করা যাবে? 

যেহুতু আপনি আপনার এনআইডি ব্যবহার করে পাসপোর্ট সংশোধন করতে চান, সেহুতু বর্তমান সময়ে এই কাজটি করা যাবে কিনা তা জানতে হবে। তো এই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সারির গনমাধ্যম www.ittefaq.com এ একটি আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়েছে। চলুন জেনে নেই উক্ত আর্টিকেলে কি কি বলা হয়েছে। 

আগের ঝামেলা

আগে, অনেক মানুষ পাসপোর্টে তথ্য সংশোধনের জন্য ভোগান্তির সম্মুখীন হতেন কারণ তাদের নামের শুরুতে “মো.” বা “মোহা.” ছিল। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর “মোহাম্মদ” ছাড়া অন্য কোন নাম রাখার অনুমতি দিত না।

নতুন সুযোগ

এখন আর সেই ঝামেলা নেই! নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আপনি যদি চান তাহলে পাসপোর্টে “মো.” বা “মোহা.” ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও, এনআইডিতে দেওয়া নাম, পিতা-মাতার নাম এবং বয়স অনুযায়ী পাসপোর্টের তথ্য সংশোধন করা যাবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এর সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন

পাসপোর্টের কোন তথ্য গুলো সংশোধন করা যাবে?

যখন আমরা পাসপোর্ট তৈরি করি তখন বিভিন্ন কারণে আমাদের পাসপোর্টের মধ্যে ভুল তথ্য যুক্ত হয়ে যায়। আর এমন ভুল যদি আপনার ক্ষেত্রেও হয় তাহলে চিন্তিত হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই। বরং আপনাকে মাথা ঠান্ডা করে পাসপোর্টে থাকা ভুল তথ্য গুলো সংশোধন করে নিতে হবে। 

কারন, বর্তমান সময়ে পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ তথ্য সংশোধনপূর্বক পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার মাধ্যমে আপনার ভুল তথ্য সংশোধনের সুযোগ করে দিয়েছে। আর বর্তমানে আপনি আপনার পাসপোর্টের যেসব তথ্য সংশোধন করতে পারবেন সেগুলো নিচের তালিকায় শেয়ার করা হলো। যেমন, 

  • নাম: আপনার নামের বানান ভুল থাকলে বা নাম পরিবর্তন করতে চাইলে তা সংশোধন করা যাবে।
  • পিতা-মাতার নাম: জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী পিতা-মাতার নাম ভুল থাকলে তা সংশোধন করা যাবে।
  • জন্ম তারিখ: ভুল জন্ম তারিখ থাকলে তা শিক্ষাগত সনদপত্রের মাধ্যমে সংশোধন করা যাবে।
  • পেশা: পেশা পরিবর্তন হলে তা সংশোধন করা যাবে।
  • অন্যান্য: ঠিকানা, বৈবাহিক অবস্থা ইত্যাদি তথ্যে ভুল থাকলেও তা সংশোধন করা যাবে।

মোটকথা আপনার পাসপোর্টে যদি উপরোক্ত তথ্য গুলো ভুল আসে সেক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই সেই গুলো সংশোধন করে নিতে পারবেন। 

পাসপোর্ট সংশোধন করার জন্য কি কি লাগবে?

আপনি যখন আপনার ভুল তথ্য থাকা পাসপোর্ট সংশোধন করবেন, তখন আপনার নিকট বেশ কিছু দরকারি ডকুমেন্টস থাকতে হবে। আর উক্ত ডকুমেন্টস গুলোর মাধ্যমে আপনাকে সংশোধন এর জন্য আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে যেসব ডকুমেন্টস এর দরকার হয় সেগুলো হলো, 

  • আবেদন ফরম: নির্ধারিত ফরমটি ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে হবে।
  • বর্তমান পাসপোর্ট বা মূল পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  • ভুল তথ্যের সঠিকতা যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমন, জন্ম সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ইত্যাদি)।
  • পাসপোর্টে পরিবর্তন আনার জন্য একটি লিখিত আবেদনপত্র।
  • সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • নির্ধারিত ফি।

আপনারা যারা নিজের এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম গুলো জানতে চান তাদের সবার প্রথমে উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলো সংগ্রহ করতে হবে। তারপর আপনাকে উক্ত সংশোধনী কাজের পরবর্তী ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে। 

এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম

যারা এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করতে চান তাদের সবার প্রথমে উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলো সংগ্রহ করতে হবে। তারপর আপনাকে পাসপোর্ট সংশোধনী ফরম অনলাইন থেকে সংগ্রহ করতে হবে। সেইসাথে আপনাকে অনলাইন থেকে একটি অঙ্গীকারনামা ডাউনলোড করতে হবে। তারপর উক্ত ডাউনলোড করা আবেদন ফরম ও অঙ্গিকারনামা টি প্রিন্ট করতে হবে। 

  • পাসপোর্ট সংশোধনী আবেদন ফরম- (Click Here)
  • অঙ্গীকারনামা- (Click Here)

এই কাজটি করার পর আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সেগুলো পূরণ করতে হবে। এই সব গুলো কাজ সম্পন্ন করার পর আপনাকে উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো আবেদন ফরমে যুক্ত করে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে। 

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর-

এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম গুলো নিয়ে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। তবে এরপরও আপনার উক্ত বিষয়টি নিয়ে আরো অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে, যেগুলো নিচে শেয়ার করা হলো। 

সংশোধন আবেদন করার কতদিন পর পাসপোর্ট পাওয়া যাবে? 

আপনি যখন সঠিক নিয়ম মেনে পাসপোর্ট সংশোধন এর জন্য আবেদন করবেন। তার পরবর্তী জরুরী পাসপোর্ট ৭ কর্ম দিবস এবং সাধারন পাসপোর্ট ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে গ্রাহকের হাতে পৌছে যায়। তাই খেয়াল রাখবেন, আবেদন করার সময় আপনার ডকুমেন্টস বা তথ্য গুলোতে যেন কোনো ভুল না থাকে।

পাসপোর্ট সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?

যখন আপনি আপনার পাসপোর্ট সংশোধন করবেন তখন আপনাকে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে। সেক্ষেত্রে ৪,০২৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০,৩৫০ টাকা (ভ্যাট সহ) প্রয়োজন হবে। কিন্তুু আপনার সেই পাসপোর্ট সংশোধন করার জন্য আলাদা কোনো ফি নেওয়া হবেনা।

আপনার জন্য আমাদের শেষকথা

বর্তমান সময়ে আপনি আপনার এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করতে পারবেন। তাই আজকে খুব সহজ ভাবে এনআইডি অনুযায়ী পাসপোর্ট সংশোধন করার নিয়ম গুলো দেখানো হয়েছে। এছাড়াও আপনি আপনার জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন চেক অনলাইনে এনআইডি কার্ড সংশোধন নিয়ে লেখা কন্টেন্ট গুলো পড়তে পারেন। ধন্যবাদ, এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য। 

Leave a Comment